ঘানি ভাঙা সরিষার তেল (Mustard oil)।
সর্ষের তেল বা সরিষার তৈল সর্ষের (সরিষা) বীজ নিষ্পেষণ দ্বারা প্রস্তুত তেল। এই তেল রান্নার জন্যে, এবং গায়ে মাখা বা মালিশ করার কাজে ব্যবহার হয়। সর্ষের তেলের ঝাঁঝের জন্যে সর্ষের তেলের রান্নার আলাদা বিশেষত্ব আছে।
সর্ষের তেলের ঝাঁঝের কারণ অ্যালাইল আইসোথায়োসায়ানেট নামক একটি উদ্বায়ী সালফারযুক্ত।
মাছ
ও ডিম ভাজা, ভর্তা বা ঝালমুড়ির জন্য সরিষার তেল ছাড়া অনেকে চিন্তাই করতে পারেন না। এটি কেবল স্বাদের জন্য নয়। বহুকাল ধরে এই তেল ব্যবহারের পেছনে রয়েছে নানা কারণ। বলা হয়, সরিষার তেল হলো এ অঞ্চলের অলিভ অয়েল।
সরিষাবীজ থেকে তৈরি হয় সরিষার তেল। এটি গাঢ় হলুদ বর্ণের এবং বাদামের মতো সামান্য কটু স্বাদ ও শক্তিশালী সুবাসযুক্ত তেল। ওমেগা আলফা-৩ ও ওমেগা আলফা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন-ই ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের সমৃদ্ধ উৎস হওয়ায় সরিষার তেলকে স্বাস্থ্যকর তেল বলা হয়।
দাঁতের মাড়ি ক্ষয় দূর করতে সরিষা মাজন হিসাবে ব্যবহার করলে ভাল ফল পাওয়া যাবে।
দেহের ঝিনঝিনি দূর করতে
ফাইলেরিয়া বা গোদ রোগ হলে খাঁটি সরিষার তেল খেলে উপকার পাওয়া যাবে।
জ্বর সারাতে
সরিষার মধ্যে আছে সেলেনিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম। ফলে এর তেল হাঁপানি, ঠাণ্ডা জ্বর, সর্দি, কফ, কাশি ইত্যাদি থেকে রেহাই দিতে পারে।
হজমশক্তি বাড়ায়
সরিষায় আছে ভিটামিন-বি কমপ্লেক্স, ফলিক অ্যাসিড, নিয়াসিন ও থায়ামিন, যা শরীরে মেটাবলিজমের পরিমাণ বাড়িয়ে হজমে শক্তি যোগায়।
প্রাকৃতিক সানস্ক্রিন
সরিষার তেল খুব ঘন হয় এবং এতে উচ্চমাত্রার ভিটামিন-ই থাকে। এই তেল ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মিসহ অন্যান্য দূষিত পদার্থ থেকে ত্বককে সুরক্ষা করে। এই তেলে থাকা ভিটামিন-ই বলিরেখা ও বয়সের ছাপ দূর করতেও সাহায্য করে। তাই সানস্ক্রিন লোশনের মতোই এটি ব্যবহার করতে পারেন। তবে এই তেল যেহেতু ঘন, তাই ত্বকে লাগানোর পর ভালোভাবে ঘষে নিতে হবে, যেন অতিরিক্ত তেল লেগে না থাকে।
চুলের বৃদ্ধিতে সহায়ক
সরিষার তেল চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। অকালে চুল সাদা হওয়া রোধ করে ও চুল পড়া কমায়। সরিষার তেলে প্রচুর ভিটামিন ও খনিজ থাকে। বিশেষ করে উচ্চমাত্রার বিটা ক্যারোটিন থাকে এতে। বিটা ক্যারোটিন ভিটামিন-এতে রূপান্তরিত হয়ে চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এছাড়া এতে আয়রন, ক্যালসিয়াম, ফ্যাটি অ্যাসিড ও ম্যাগনেসিয়াম থাকে, যা চুলের বৃদ্ধিতে অনেক সাহায্য করে।
চুল পাকা রোধ করতে
সরিষা তেলের পুষ্টি উপাদান, ভিটামিন, মিনারেল চুলের অকালপক্বতা রোধ করে থাকে। প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এই তেল মালিশ করুন চুল এবং মাথার তালুতে যা আপনার চুল পাকা রোধ করবে।
বাত দূর করে
বাতরোগ ও হাড়ের জোড়ায় ব্যথা উপশমে আক্রান্ত স্থানে সরষে বাটা বা তেল মালিশ করলে আরাম পাওয়া যাবে।
ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়
সরিষার তেলে গ্লুকোসিনোলেট নামক উপাদান থাকে, যা অ্যান্টিকারসিনোজেনিক উপাদান হিসেবে পরিচিত। তাই এটি ক্যানসারজনিত টিউমারের গঠন প্রতিরোধে সাহায্য করে। এর ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট কোলোরেক্টাল ও গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টাইনাল ক্যানসার থেকে সুরক্ষাও প্রদান করে।
ঠোঁটফাটা রোধ করে
ঠোঁট ফাটা খুব সাধারণ একটি সমস্যা। অনেকের এই সমস্যা এত বেশি হয়ে থাকে যে লিপবাম কাজ করে না। অল্প একটু সরিষার তেল নিয়ে ঠোঁটে লাগান। এই প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার ঠোঁটফাটা রোধ করে ঠোঁট নরম কোমল করে তোলে।